রোজার Information: অনিয়ন্ত্রিত ভোগ্যপণ্যের বাজার। চাহিদা বিবেচনায় বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। রোজা ঘিরে লেবু, বেগুন ও শসার দাম নিয়ে চলছে তুঘলকি কাণ্ড। তাদের দেখার কেউ নেই।
নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটাই প্রথম রমজান। কিন্তু এই রোজাকে ঘিরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করে তুলছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এরই মধ্যে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অর্থমন্ত্রী। সেখানেও আলোচনায় উঠে আসে দামের পরিস্থিতি।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বাংলাদেশে মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। এর আগে বাজারে সব পণ্যের দাম বেড়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও বেড়েছে লেবু, শসা, বেগুনের দাম।
বিক্রেতারা বলছেন, গত দুই দিনে লেবু ২০-৩০ টাকা, বেগুন ও শসা ২০ টাকা কেজিতে বেড়েছে। গত দুই দিনে ইফতারে ব্যবহৃত অনেক পণ্যের দাম বেড়েছে। রমজানে বেশি ব্যবহৃত কাঁচামালের দাম বাড়ছে।
খুচরা বাজারে দেখা গেছে, একটি বড় লেবুর জন্য ব্যবসায়ীরা ৮০ টাকা নিচ্ছেন। অর্থাৎ প্রতি পিস লেবু ২০ টাকা। লেবুর ছোট টুকরা ১২ থেকে ১৫ টাকায় কেনা যায়।
লেবুর এমন আগুন দামে বিস্মিত স্বয়ং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম। রোববার বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ঢাকার মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট পরিদর্শনে গিয়ে কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বলেন, এখানে দেখলাম একটি লেবুর দাম ৬০ টাকা, একটির দাম ১৫ টাকা। কিন্তু কিছুক্ষণ আগে আমার নির্বাচনী এলাকা টাঙ্গাইলে ফোন করে জানতে পারি প্রতিটি লেবু পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৬ টাকা।অর্থাৎ ঢাকায় ১০০ কিলোমিটার যাওয়ার পর একটি লেবুর দাম তিনগুণ বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় এগুলো নিয়ে কাজ শুরু করেছে। তবে রাতারাতি নয়, কয়েক মাসের মধ্যেই বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে। তদারকির জন্য নিয়মিত টিমের পাশাপাশি আলাদা টিম বাজারে কাজ করবে। বাজারে দাম বাড়লেও পণ্যের কমতি নেই। সরকার পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়াতে কাজ করছে।
রাজধানীর কয়েকটি বাজারে খুচরা বিক্রেতারা সর্বোচ্চ ৮০ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি করছেন। কয়েকদিন আগে পণ্যটি বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। কৈরান বাজার, মিরপুরসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিক্রেতারা ৮০ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি করছেন।
রমজানে অন্যান্য পণ্যের দামও বাড়লেও আমদানি সংকট ও ডলারের ঊর্ধ্বগতির মতো কারণ রয়েছে। তবে দেশের উৎপাদন দিয়ে লেবুর চাহিদা মেটানো হয়। আমদানির প্রশ্ন না থাকায় লেবুর সঙ্গে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কোনো সম্পর্ক নেই। তবে লেবুর দাম অস্বাভাবিক।
ব্যবসায়ীরা জানান, কয়েকদিন আগে ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হওয়া লেবু গত দুই দিন ধরে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। প্রতি কেজি শসার দাম বেড়েছে ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।
তারা জানান, রমজান উপলক্ষে বিভিন্ন দেশে রোজার আগে পণ্যের দাম বাড়ার কারণ জানেন না বিক্রেতারা। তারা বলছেন, রোজা আসলে দাম বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। আমাদেরও বেশি দামে কিনতে হয়।
অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, প্রতি বছর রোজা এলেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। পরবর্তীতে বাজার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ কয়েকদিন বিক্ষোভ অভিযান চালাবে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসবে এবং পণ্যের দাম ১০০ টাকা বাড়ানোর পর কমবে ৫ টাকা। এটাই রীতি হয়ে উঠেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হবে সাধারণ মানুষকে।
ইফতারির অন্যতম উপাদান হল শসা। বাজারে এখন তিন ধরনের শসা পাওয়া যায়। খুচরা ব্যবসায়ীরা হাইব্রিড শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, দেশি ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন। তবে কয়েকদিন আগে দেশি ও হাইব্রিড জাতের শসা কেনা হয়েছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে।
রোজার রোজার রোজার
রোজার রোজার রোজার