গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতা থামছে না। এরই মধ্যে ইহুদিবাদী বাহিনীর বর্বর আগ্রাসনে গাজায় অন্তত ২৭ হাজার ৯৪৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৬৭ হাজার ৪৫৯ জন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচারে অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইল। অভিযানটি উপত্যকার মাঝখানে একটি শহরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। সেটি হল মিশরীয় সীমান্তের রাফাহ, যা ইতিমধ্যেই বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরে পরিণত হয়েছে। কারণ, এই শহরকে নিরাপদ ঘোষণা করে ইসরাইল বলেছিল, বেসামরিক গাজাবাসী সেখানে আশ্রয় নেবে। এবার সেখানে সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রাফাহ থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার এবং হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, পরিকল্পিত হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের কোথায় সরিয়ে নেওয়া হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত। কারণ এখন গাজায় আশ্রয় নেওয়ার কোনো নিরাপদ জায়গা নেই।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজার ২.৩ মিলিয়ন মানুষের অর্ধেক এখন রাফাহ শহরে চলে গেছে। কিন্তু সেথানে ঘর নেই, আশ্রয় নেওয়ার জায়গা নেই।
খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের বাইরে ইসরায়েলি স্নাইপাররা অন্তত ২১ জনকে হত্যা করেছে। মৃতদের মধ্যে চিকিৎসাকর্মীরাও রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ১০৭ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১৪২ জন আহত হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলের সীমান্তে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায়। এরপর গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। চার মাসেরও বেশি সময় ধরে সেখানে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল।
এদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের দেওয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, কয়েক মাসের মধ্যে গাজায় সম্পূর্ণ বিজয় সম্ভব হবে।
গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হামাস তিন দফা, ১৩৫ দিনের চুক্তির প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, হামাসের হাতে জিম্মি করা সব ইসরায়েলিকে মুক্তি দেওয়া হবে। বিনিময়ে ইসরায়েলকে অবশ্যই অবরুদ্ধ উপত্যকা থেকে তার সব সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে এবং ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের মুক্ত করতে হবে।
গত সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য কাতারি ও মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় হামাস এই শর্তগুলো দিয়েছে। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর পাঁচ মাসের মধ্যে সংঘাতের অবসান ঘটাতে এটিই সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বলে জানা গেছে।