সম্প্রতি পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা বেড়েছে। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর ওপর হামলাও বেড়েছে। বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তান এসব হামলার জন্য আফগানিস্তানের দিকে আঙুল তুলেছে। আর এবার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সরাসরি আফগানিস্তানকে ‘সন্ত্রাসের উৎস’ বলে অভিহিত করেছেন। এমনকি তিনি অভিযোগ করেছেন যে আফগানিস্তান সন্ত্রাসবাদের মূলোৎপাটনে কাজ করছে না। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ বুধবার আবারও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে কোনো অগ্রগতি না করার জন্য আফগানিস্তানকে দোষারোপ করেছেন এবং পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের হুমকি কমাতে কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছেন, রিপোর্টে বলা হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ এক পোস্টে তিনি বলেন, সন্ত্রাসী ঘটনা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সীমান্ত পরিস্থিতির মৌলিক পরিবর্তন প্রয়োজন। পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের উৎপত্তিস্থল আফগানিস্তানে এবং আমাদের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কাবুল এ দিকে কোনো অগ্রগতি করছে না। তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন যে তালেবান প্রশাসন সন্ত্রাসীদের আস্তানা সম্পর্কে সচেতন থাকা সত্ত্বেও সন্ত্রাসীরা তাদের ভূখণ্ড থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অবাধে অভিযান চালাচ্ছে। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, “কাবুল থেকে সহযোগিতা (সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবিলায়) পাওয়া যাচ্ছে না।” ‘

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের বক্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন গত কয়েকদিন ধরে গোয়াদর বন্দর কমপ্লেক্স এবং তুরবাত নৌ ঘাঁটিতে হামলা সহ শাংলায় চীনা শ্রমিকদের বহনকারী যানবাহনে আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে।

দ্য ডনের খবরে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের ডাকা বিশেষ নিরাপত্তা সভায় যোগ দেওয়ার পর মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। যেখানে ইয়াহিয়া নামে চিহ্নিত একজন আফগান তালেবান সদস্যকে আফগানিস্তানে অবস্থানরত পাকিস্তানি সন্ত্রাসীদের সীমান্তে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনাদের উপর আন্তঃসীমান্ত হামলার পরিকল্পনা করতে সাহায্য করতে দেখা যায়।

সীমান্ত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের জটিলতার বর্ণনা দিয়ে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, পাক-আফগান সীমান্ত যেকোনো স্বাভাবিক আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে আলাদা।

তিনি বলেন, পাকিস্তানের উচিত এই সীমান্তে সকল আন্তর্জাতিক আইন ও বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করা এবং সন্ত্রাসীদের চলাচল বন্ধ করা। এভাবে উভয় দেশ ঐতিহ্যগত ভালো প্রতিবেশী হিসেবে তাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে পারে। পাসপোর্ট এবং ভিসার মাধ্যমে ভ্রমণ সুবিধা চালু রাখা যেতে পারে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে, পাকিস্তান সমস্ত আফগান নাগরিকদের দেশে প্রবেশের জন্য বৈধ পাসপোর্ট এবং ভিসা থাকা বাধ্যতামূলক করেছে।

Shares:
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *