আজ ঐতিহাসিক গণজাগরণ দিবস।আজ ২৪শে জানুয়ারি, ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয় জাতীয় মুক্তি সনদের বিখ্যাত ৬ দফা কর্মসূচি এবং পরবর্তীতে মুক্তিকামী নিপীড়িত জনগণের পক্ষে ছাত্রসমাজ প্রদত্ত ১১ দফা কর্মসূচির প্রেক্ষাপটে। শহর থেকে শুরু করে গ্রামবাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে লক্ষ লক্ষ মেহনতি মানুষের বজ্রকণ্ঠে ধ্বনিত হয়ে 11 দফা নিয়ে আসতে হবে। মুক্তির আশা ছিল মানুষের চোখে মুখে। পথিমধ্যে মিছিল-মিছিল ছিল। ১৭ জানুয়ারি থেকে ২৪ অশান্ত দিন স্বৈরাচারী সরকারের বুলেটে মারা যান আসাদ, রুস্তম, মনির, মতিউর, ডা. জোহাসহ অচেনা বহু মানুষ।
বাংলার ছাত্ররা আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে জেগে ওঠে। এক সপ্তাহব্যাপী প্রতিবাদের পর ২৪ জানুয়ারি পিছু হটে স্বৈরশাসক সরকার। 1970 সাল থেকে সেই দিনের স্মৃতি ধরে রেখে এই দিনটি গণঅভ্যুত্থান দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন। এ উপলক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি নিয়েছে।
সভাপতি মো: সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক অগ্রগতির ইতিহাসে এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। দিনটি আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে। ১৯৬৯ সালের আজকের এই দিনে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
১৯৬৬ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসন, শোষণ ও বঞ্চনা থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে ঐতিহাসিক ৬-দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। বাঙালি মুক্তি সনদ ছিল পূর্ব পাকিস্তানে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি ৬ দফা ঘোষণা। ৬-দফা ঘোষণার পর স্বাধীনতা আন্দোলন তীব্র হয় এবং সমগ্র পূর্ববঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে।
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের সম্মিলিত আন্দোলন গণআন্দোলনকে বেগবান করে। আন্দোলন নস্যাৎ করতে তৎকালীন স্বৈরশাসক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় পরিণত করেন। ১৯৬৯ সালের ২৪শে জানুয়ারী কারফিউ ভঙ্গ করে, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুসহ অন্যান্য আসামীদের মুক্তি ও সামরিক শাসনের পতনের দাবিতে রাজনীতিবিদ-ছাত্র-শিক্ষক-জনতা মিছিল করে। ওই দিন মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন ঢাকার নবকুমার ইনস্টিটিউশন স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র মতিউর রহমান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভাষণে বলেছেন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়। ৬ দফা, পরবর্তী ১১ দফা এবং ১৯৬৯ সালের গণবিপ্লবের ধারাবাহিকতায় আমরা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ পেয়েছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত সরকার দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছে। অক্লান্ত পরিশ্রমে গত ১৫ বছরে দেশের সকল আর্থ-সামাজিক খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত উন্নয়নের সুফল মানুষ ভোগ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জাতিকে উপহার দিয়েছি। আমি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছি, ইতিহাসের বিকৃতি বন্ধ করেছি। অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পথ চিরতরে রুদ্ধ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও ফাঁসি। দেশের সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে নতুন প্রজন্ম।
আজ ঐতিহাসিক গণজাগরণ দিবস
আজ ঐতিহাসিক গণজাগরণ দিবস আজ ঐতিহাসিক গণজাগরণ দিবস