অভ্যন্তরীণ বাজারে সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে পাঁচ মাসের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। পরে 4 মে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল, কিন্তু দেশটির সরকার রপ্তানিকে নিরুৎসাহিত করতে 40 শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এরপর ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অনিয়মিত হয়ে যায়। দীর্ঘ ৪ মাস ৯ দিন পর সেই শুল্ক প্রত্যাহার করে নোটিশ জারি করেছে ভারত। এমতাবস্থায় দেশের বাজারে পেঁয়াজের আমদানি বাড়লে দাম কমবে বলে দাবি করেছেন হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা।

গতকাল সন্ধ্যায় ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক সন্তোষ কুমার স্বাক্ষরিত একটি নোটিশের মাধ্যমে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। ওই নোটিশের একটি অনুলিপি বাংলাদেশি আমদানিকারকদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির ব্যবসায়ীরা। এতে দেশের পেঁয়াজের দামে চলমান অস্থিতিশীলতার অবসান ঘটবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশি আমদানিকারকরাও।

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের বাজারের তুলনায় ভারতে দাম বেশি হওয়ায় আমাদের পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসান গুনতে হয়েছে। এ কারণে ভারত থেকে অনিয়মিতভাবে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। পরে, দেশের বাজারে দাম কিছুটা বাড়লে ৪০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে আমদানি করায় দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে।

এমন পরিস্থিতিতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন দেশের ব্যবসায়ীরা। তুলনামূলক কম দামের কারণে অনেকেই মিশর, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি শুরু করেন। এই পরিস্থিতিতে গতকাল সন্ধ্যায় একটি নোটিশের মাধ্যমে পেঁয়াজ রপ্তানিতে আরোপিত ৪০% শুল্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত। দেশের ব্যবসায়ীরা বিষয়টি বাংলাদেশের আমদানিকারকদের নিশ্চিত করেছেন, যা আগামী রোববার থেকে কার্যকর হবে বলে জানান তারা।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা জানান, পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে বন্দর দিয়ে আমদানির পরিমাণ আগের তুলনায় বাড়বে। এতে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমবে। দাম নিয়ে যে অস্থিরতা চলছিল তার অবসান হবে বলেও জানান তারা।

প্রসঙ্গত, রপ্তানিকে নিরুৎসাহিত করতে গত বছরের ২৮ অক্টোবর ভারত পেঁয়াজের দাম প্রতি টন ৮০০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে। ওই দামেই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করছিলেন ব্যবসায়ীরা। পরবর্তীকালে, বন্যার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার উল্লেখ করে গত বছরের 7 ডিসেম্বর ভারতের বিদেশী বাণিজ্য শাখার মহাপরিচালক সন্তোষ কুমার স্বাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে চার মাসের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর থেকে হেলিসহ বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। 23 শে মার্চ, ভারত সরকার সেই সময়কাল বাড়িয়েছে এবং পেঁয়াজ রপ্তানির উপর অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। পরে গত ৪ মে নোটিশের মাধ্যমে দেশটি রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে।

Shares:
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *