টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জ জেলায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে তলিয়ে যাচ্ছে জেলার নিম্নাঞ্চল। ইতোমধ্যে জেলার ৫ উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের ৮ হাজার ২৪০ পরিবার বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর এ কারণে পানিতে আটকা পড়েছেন ৩৩ হাজার ৪৬৮ জন। বন্যাকবলিত উপজেলাগুলো হলো চুনারুঘাট উপজেলা, মাধবপুর উপজেলা, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা, হবিগঞ্জ সদর ও নবীগঞ্জ উপজেলা।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকেলে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সুমি রানী বল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য এ পর্যন্ত মোট ১১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। ৫০ জন পুরুষ, ৬৫ জন নারী ও ২৫ জন শিশু আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। সুমি রানী বল জানান, পানিবন্দি মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ৯৬৫ টন চাল, ১ হাজার ৫৬০ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং নগদ ২৩ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত চুনারুঘাট উপজেলার খোয়াই নদীর বল্লা পয়েন্টে সীমার ২৭৮ সেন্টিমিটার, শায়েস্তাগঞ্জ পয়েন্টে ১৬৭ সেন্টিমিটার, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার মাছুলিয়া পয়েন্টে ১৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার, বানিয়াচং মারকুলি পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার এবং আজমিরীগঞ্জের কালনী নদীতে ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় মোট বৃষ্টিপাত ৫২ মিলিমিটার। হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি, রোপা আমনের ঘরসহ মাছের ঘের। অনেক জায়গায় মানুষকে বন্যার পানিতে মাছ ধরতেও দেখা গেছে। আর বন্যা বিপর্যয়ে পড়েছে চরম দুর্ভোগ। জেলার নিচু এলাকা তলিয়ে গেলেও অধিকাংশ উঁচু এলাকা এখনো অক্ষত রয়েছে। তবে পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকাটি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Shares:
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *