সংবিধান থেকে সমাজতন্ত্র, জাতির জনক, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার মতো কিছু বিষয় বাদ দেওয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
বুধবার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে জারি করা রুলের শুনানিতে এসব কথা বলেন তিনি। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ শুনানি হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে এই নয় যে হাজার হাজার মানুষকে গুম করা হবে, ৬০ লাখের বেশি লোক গায়েবি মামলার আসামি হবে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হবে। যাদের হাত নেই, এমন ব্যক্তিদের আসামি করে বোমা মেরেছে বলেও জানান তিনি। হজে যাওয়া ব্যক্তিদেরও অভিযোগ আনা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে এসব ঘটতে পারে না।
আসাদুজ্জামান বলেন, “সংবিধানের ৭বি অনুচ্ছেদের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। সংবিধানের মূলনীতি হচ্ছে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র নয়। আমরা সমাজতন্ত্রকে দূর করতে চাই। শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে কেউ অস্বীকার করবে না। পিতাকে নিয়ে একটি গুরুতর বিতর্ক রয়েছে। জাতি বিভক্ত হয়ে পড়েছিল পঞ্চদশ সংশোধনীতে বলা হয়েছে- তার (শেখ মুজিব) বিরুদ্ধে কথা বলা সংবিধানের চেতনার পরিপন্থী।
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা সংবিধানের ৬ অনুচ্ছেদ বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেন, এতে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বের কোনো দেশে ভাষা দ্বারা জাতিসত্তাকে সংজ্ঞায়িত করা হয় না। অনুচ্ছেদ ৭এ ও ৭বি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য করা হয়েছে। এটা করা হয় স্বৈরতন্ত্রকে দীর্ঘায়িত করার জন্য। এটা আইনের শাসনের পরিপন্থী।
আট নম্বর ধারা প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এখানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটি বসানোর দরকার নেই। এই দেশের 90% মুসলিম। আগে আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস ছিল। আমি এটা আগে যেমন ছিল চাই. এবং 2 এ বলা হয়েছে যে রাষ্ট্র সকল ধর্ম পালনে সমান অধিকার ও সমতা নিশ্চিত করবে। 9 নং ধারায় ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ সম্পর্কে বলা হয়েছে। এটা পরস্পরবিরোধী।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিলুপ্তি বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করেছে এবং মৌলিক অধিকার বিনষ্ট করেছে। পঞ্চদশ সংশোধনীকে কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না? এটাকে সংবিধানের অংশ হিসেবে রাখা যাবে না। পঞ্চদশ সংশোধনী বহাল রাখা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, 1990 সালের গণঅভ্যুত্থান এবং 1924 সালের জুলাই বিপ্লবের সাথে সাংঘর্ষিক। এই পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল না হলে আবু সাইদ, মুখদাসহ শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে না। শান্তি