বেনজিরের Information: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দক্ষিণ আলিপুর গ্রামে ৪৮ বিঘা জমিতে আধুনিক ইটের ভাটা স্থাপন করে জীবনের নতুন স্বপ্ন দেখালেন আনারুল ইসলামের ছেলে আশরাফুজ্জামান হাবলু। কিন্তু যাত্রা শুরুর কয়েকদিনের মধ্যেই পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ইটের ভাটাটি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের শ্যালক মির্জা আনোয়ার পারভেজ দখলে নেন। পারভেজ রাতের আঁধারে তার ভগ্নিপতির শক্তি দেখিয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে হাবলুর কাছ থেকে ইটভাটাটি বাসা থেকে নিয়ে যায়।

আইজিপি হওয়ার আগে বেনজীর আহমেদ টানা পাঁচ বছর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক ছিলেন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তার ক্ষমতা ঢাকা থেকে আড়াইশ কিলোমিটার দূরে সাতক্ষীরায় ছড়িয়ে পড়েছে। সীমান্তবর্তী এই জেলায় তার শ্বশুরবাড়ি। তার শ্যালক আনোয়ার পারভেজ তার ভগ্নিপতির ক্ষমতায় সাতক্ষীরায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। 2018 সালে, নির্মাণ শেষ হওয়ার কয়েকদিন পরে তিনি হাবলুর ইটের ভাটা দখল করেন।

এ জন্য তাকে চারবার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সে সময় র‌্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন বেনজির।

সরেজমিন তদন্তে জানা গেছে, হাবলুর ইটের ভাটার নাম ‘নিউ আলিপুর ব্রিকস’। তিনি এলাকার ৪০ জন জমির মালিকের কাছ থেকে ৪৮ বিঘা জমি লিজ বা ভাড়া নিয়েছিলেন।

তিনি প্রতি বিঘা ২৫ হাজার টাকায় ১০ বছরের চুক্তি করেন। আলিপুর ইউনিয়ন পরিষদ 22 জুলাই 2018 সালে হাবলুর নামে ইট ভাটা জারি করে। একই বছরের 14 জুন তিনি পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্রও পান।

আশরাফুজ্জামান হাবলু বলেন, “২০১৭ সালে ইট ভাটার কাজ শুরু হয়। প্রাথমিক বিনিয়োগ ছিল প্রায় ২ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত সেখানে বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ কোটি টাকা। একপর্যায়ে মির্জা আনোয়ার পারভেজ আমার সঙ্গে যোগ দেওয়ার আগ্রহ দেখান। এলাকার ‘বড় ভাই’ হিসেবে তা করতে পারিনি। তৎকালীন র‌্যাবের ডিজি বেনজীর আহমেদের শ্যালক হিসেবে পারভেজ এলাকায় যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেন। ফলে পারভেজকে ইটভাটায় অংশীদার হিসেবে নেওয়া হয় কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই।”

তিনি আরও বলেন, ইটভাটা নির্মাণের কাজ শেষ হলে পারভেজের চরিত্রের পরিবর্তন হতে থাকে। তিনি প্রশাসনকে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকেন। আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘তারা আমাকে ডিবি ও পুলিশের সঙ্গে চারবার ধরে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, মুখে কালো কাপড় বেঁধে ইটপাটকেল লেখার হুমকি দেয়। ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে জীবন বাঁচান। একই সঙ্গে থানায় বসে আনোয়ার পারভেজকে চিঠি লিখি। অতীতের রাজনৈতিক বিচারাধীন মামলায় আমাকে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি এসব করেছেন ভগ্নিপতি বেনজীর আহমেদের ক্ষমতায়।

হাবলুর ইটভাটা দখলের বিষয়ে আলীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মশিউর রহমান ময়ূর বলেন, “আইজিপি বেনজির সাহেব যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন মির্জা আনোয়ার পারভেজ জোর করে হাবলুর ইটভাটা দখল করে নেন। হাবলু এখনো সেই ইট ফেরত দেয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা সদর উপজেলার আলীপুরের গোলার আটি গ্রামে গেলে অভিযোগ করেন, আনোয়ার পারভেজ থানায় চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও মোটা অঙ্কের টাকা চুরি করেছে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে চাকরি না দিয়ে নয়-ছয় করতে থাকেন। চাকরিপ্রার্থীরা টাকা ফেরত চাইলে পুলিশ তাদের আটক করে নির্যাতন করে। দেওয়া হয়েছে মিথ্যা মামলা। এই হয়রানির হাত থেকে রেহাই পাননি আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারাও।

আলীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মন্টু বলেন, প্রশান্ত কান্তি দাস নামে এক যুবক বেনজীর আহমেদের স্ত্রীর বড় ভাই মির্জা আনোয়ার পারভেজের হয়ে এলাকার অনেকের কাছ থেকে টাকা নেন। তাদের মধ্যে আমার এক আত্মীয়। এছাড়াও একটি শিকার.

তিনি আরও বলেন, ‘বেনজিরের মাধ্যমে পুলিশে চাকরি দেওয়ার টাকা নিয়ে কেউ চাকরি পায়নি। টাকা ফেরত দিতে গেলে ঝামেলা হবে। এসব নিয়ে আমি প্রতিবাদ করলে আনোয়ার পারভেজ আমার ওপর রেগে যান। এরপর বেনজিরের ক্ষমতায় আমাকে মিথ্যা মামলায় দুইবার জেল খাটতে হয়েছে। 2017 সালের 19 ফেব্রুয়ারি প্রথম মামলাটি দায়ের করা হয়। তারপর পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেলে দেয়। এরপর ২০১৯ সালের শেষ দিকে আবারও মিথ্যা মামলা করা হয়। বিভিন্ন ভিত্তিহীন মামলায় দেড় মাস জেল খাটতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, সাবেক আইজিপির শ্যালক স্থানীয় ব্যবসায়ী হাবলুর ইটাবাট্টা জোরপূর্বক হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জানান, মির্জা পরিবারের অত্যাচারে এলাকার সবাই ব্যথিত। এ পরিবারের জামাতা বেনজীর আহমেদ এলাকার সব মানুষের নিয়ন্ত্রণে। বাদ যায়নি প্রতিবেশীরাও। তিনি জানান, বেনজিরের শ্যালক পারভেজ পার্শ্ববর্তী নজরুলের জমিতে জোরপূর্বক সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন। তিনি প্রতিবাদ করলে পুলিশ এসে নজরুলকে আটক করে। বিনা বিচারে তাকে দেড় মাস জেল খাটতে হয়েছে।

সাতক্ষীরায় বনজীর শাশুড়িপাশ্ব শতকের বিঘার মাছের ঘের

সাতক্ষীরাশুনি কংগ্রেস ১ নম্বর শোভনালী ইউনিয়নের শরাফপুরের বনের আহমেদের বাড়ি বাড়ি। ক্লাশের রয়েছেশু রয়েছে এই পুলিশ কর্মকর্তা শাড়ি লুৎফুন নেসার সাতাধিক বিঘার চারটি মাছের ঘা। এ ছাড়া আরকুনি মৌজায় অংশ, পশ্চিম বিল আর দেনার পুঁটিমারি বিপণিক আরো মাছের ঘের রয়েছে। স্থানীয়রা মতন, এই মাছের ঘেরের জমির শতক বিঘার বেশি।

সরেজমিনে ব্যক্তি এলাকার কথাড়ি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে জানা গেছে, বনজীর আহমেদের শাশুর নিয়োগ দেখাশোনা করতে বশির আহমেদ এক। এই বশির আহমেদ গত ১৫ বছরের বেনজীর আহমেদ এবং তাঁর স্ত্রী জীশান মীর্জার সঙ্গে শক্তির জোরের জন্য প্রভাব খাটাতে ব্যাপক ক্ষমতার স্পষ্ট হয়ে উঠেছেন। এলাকাবাসীর বার্তা, বশিরের সব অধিকারে বনজীরের শাশুড়ি লুতফুন নেসার অংশীদারি রয়েছে।

এ বিষয়ে কথা হয় আহমেদের বাল্যবন্ধু শরাফপুর শিক্ষক নিত্যানন্দের সাথে তিনি বলেন, এক সময়ে বশির ছোটো রেফারে মাছের ঘেরের ব্যবসা করতে। তবে গত কয়েকটা বহু বিপুল মাছের ঘেরে বনে যান তিনি। জনশ্রুতি রয়েছে, মল মাছের ঘেরে বনজীর আহমেদের শাশুড়ি লুতফুন নেসা মুনসুরের অংশীদারি রয়েছে।

শরাফপুর কার্ত্তিক চন্দ্র দাস বলেন, ‘বেনজীর শাশুড়িরপ শরাফপুর পূর্ব বিলে ১০ বিঘা জমিতে মাছের ঘের আছে, যা অন্যরা শোনা করে। এ ছাড়া আশপাশে আরো জমি কেনা আছে। তার কত, তা বলতে পরব না।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ৩ নম্বর ওয়ার্ড) আলমগীর হোসেন সরদার বলেন, বনজীর আহমেদের শাশুর চার বিঘা জমিতে মাছের ঘের আছে। এ ছাড়া তাঁর ছোট ছোট মাছের ঘের কেনা আছে। এই ঘেরগুলো গ্রামবাসীর কাছে বর্গা দেওয়া রয়েছে।

মধ্যবর্তী লুৎফুন নেসার কাছ থেকে জমি বর্গ স্থানীয় কাঠমিস্ত্রি রেজাউল ইসলাম। বনজীর শাশুড়ির কাছ থেকে তিনি সাত বিঘা জমি বর্গা নিয়ে মাছের ঘের বলেছেন বলে করেছেন।

শারাফপুর মিডিয়াক বিদ্যালয় শিক্ষক সান দা বলেন, পশ্চিম বিল এবং দেনার পুঁটিমারি বিলে বনজীর শাশুড়িরপাখি মাছ আরো ঘের আছে, যা স্থানীয় আমাদের কাছে বর্গা দেওয়া হয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘তারা পুলিশের স্বজন। আমরা যতটুকু টুকলি, তাদের দেখা-বেনামেও ক্ষমতা আছে। কেবলমাত্র মাছের ঘের করা হয়েছে।

৩০ বছর ধরে বনজীরশ্বশুরের বাড়িতে কেয়ারটেকের কাজ করছেন আবুল বাশার শিমুল। তিনি বলেন, ‘সারা জীবন প্রোফাইল আসছি কপপুর বেগমের (বেনজীর আহমেদের শাশুড়ির ডাকনাম) ২০ বিঘা বাড়ি আছে। তবে নতুন কী জমি’ তা আমার জানা নেই।

ভানা ইউনিয়নের ইউপির সমস্যালী মাজীওলানা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘বেনরের শাশুড়ি, ও তার স্ত্রী সম্পর্কে কিছু বলে আমরা বিপদে না পড়ি।

Shares:
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *