আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্যের ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়েছে ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ। ফিলিস্তিনি গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধের বিরুদ্ধে দেশটির কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপর স্বল্প সময়ের মধ্যে সারাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে এটি। বিক্ষোভ সামলাতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে চাপে রয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি সিনেট কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভ থামাতে বেশ কয়েকটি ব্যর্থ প্রচেষ্টার পরে ক্যাম্পাস পুলিশকে ডেকেছিল। গ্রেপ্তার করা হয়েছে 550 ছাত্রকে। কোথাও কোথাও ছাত্রদের ওপর পুলিশের নির্যাতনের বিষয়টিও সামনে এসেছে। কিন্তু তাতেও সুরাহা হয়নি।
উল্টো বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট প্রেসিডেন্ট মিনোশি শফিকের বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে একটি প্রস্তাব পাস করে। প্রস্তাবটি 62-14 ভোটে পাস হয়েছে।শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে এসব কর্মসূচি পালন করছে। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক থেকে তাদের সংগঠনকে দূরে সরিয়ে নেওয়া।
শুক্রবার রাতে এনবিসি টুডে-র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা আমেরিকা জুড়ে ৪০টিরও বেশি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ক্যাম্পাসে তাঁবু বানিয়ে গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধের দাবি জানাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।জানা যায়, বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বোস্টনের এমারসন কলেজে। শুক্রবার রাতে সেখান থেকে আটক করা হয় অন্তত শতাধিক শিক্ষার্থীকে।
এছাড়া ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির ২৪ জনেরও বেশি ছাত্রকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।বৃহস্পতিবার জর্জিয়ার এমরি ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। দর্শন বিভাগের প্রধান নো লি ম্যাকাফিকে সেদিন গ্রেফতার করার পরপরই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
গ্রেপ্তারের আগে তিনি আটলান্টা পুলিশের ছাত্রদের তাঁবুর কাছে যাওয়ার ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। তিনি পুলিশকে থামানোর কথা বলার পর তাকে আটক করা হয়। এমরি ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক ক্যারোলিন ফোহলিনকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে নিজের পরিচয় জানার পরও তাকে মাটিতে ফেলে হাতকড়া পরিয়ে দেওয়া হয়।ওহিওতে, পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রদের গ্রেপ্তার করেছে। ওই রাতে অন্তত ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।এদিকে লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে ইসরায়েলপন্থী এবং ফিলিস্তিনপন্থী ছাত্ররা একে অপরের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পরস্পরবিরোধী স্লোগান দেয়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভে লাগাম টেনে ধরতে আইন প্রণেতাদের চাপের মুখে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলস্বরূপ, কলম্বিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় সেনেট, বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল, প্রশাসনের বিক্ষোভ পরিচালনার বিষয়ে একটি তদন্ত শুরু করেছে৷